বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে সহকারী অফিসারসহ এন্ট্রি-লেভেল পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক – এটাই বহুদিনের প্রচলিত নিয়ম। সংশ্লিষ্ট নীতিমালার ৭.০২ ও ৭.০৩ ধারা অনুযায়ী অন্তত ৫০ শতাংশ নম্বর পায় এমন প্রার্থীরাই কেবল ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
কিন্তু নীতিমালাটির ৭.০৪ ধারায় একটি বিশেষ ছাড়ের সুযোগ রাখা হয়েছে, যেখানে উল্লেখ আছে: “In case of exigency, the Managing Director & CEO of the Bank may appoint manpower… at Entry as well as at Lateral Entry Grades… relaxing the above recruitment formalities.” অর্থাৎ বিশেষ জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা সিইও চাইলে নিয়োগ বিধিমালা শিথিল করে লিখিত পরীক্ষাবিহীন সরাসরি নিয়োগ দিতে পারেন।
এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনায় আসার পর ব্যাংকের টার্নঅর্আউন্ড ও দ্রুত সম্প্রসারণের লক্ষ্যে অল্প সময়ে দক্ষ জনবল নিশ্চিত করার জন্য এই ৭.০৪ ধারাকে ব্যবহার করেছিল যা প্রতিষ্ঠানটির বিচক্ষণ কৌশলগত সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখা হয়। কেননা, ব্যাংকিং খাতে প্রতিযোগিতা দিনে দিনে তীব্র হচ্ছে এবং সঠিক সময়ে সঠিক জনবল না পেলে বাজার হারানোর ঝুঁকি ছিল প্রবল।
যদিও কেউ কেউ এটাকে নিয়োগ পরীক্ষার বাইরে গিয়ে নিয়োগ দেওয়া বলে সমালোচনা করেছেন, বাস্তবে ব্যাংকের সক্ষমতা ও সেবা টিকিয়ে রাখতে জরুরি ভিত্তিতে অভিজ্ঞ ও প্রস্তুত জনশক্তি নিয়োগের বিকল্প ছিল না।
বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক আবারও পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল আছে যাতে করে নিয়োগপ্রাপ্তদের বৈধতা যাচাই হয় এবং ভবিষ্যতে নিয়োগ মেধাভিত্তিক হয়।
তবে যাদের অনেকে ইতোমধ্যে চাকরি করছেন বা দীর্ঘদিন পড়াশোনার বাইরে রয়েছেন, তাদের মধ্যে এই পর্যায়ে এসে কঠিন লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়া বেশ দুরূহ হয়ে পড়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা, পরীক্ষাভিত্তিক এই নিয়োগব্যবস্থায় ফিরলে প্রার্থীদের মধ্যে প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি ব্যক্তি প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়তে পারেন।
— ইমরান উদ্দিন
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ