মানুষের জীবনে সন্তান একটি পরম আশীর্বাদ। তবে আজও আমাদের সমাজের অনেক অংশে কন্যা সন্তানের আগমনকে আনন্দের বদলে হতাশার চোখে দেখা হয়। অথচ কন্যা সন্তান হলো আল্লাহ তায়ালার এক অনন্য দান, এক অপার রহমত, যার গুরুত্ব ও মর্যাদা কোরআন ও হাদীসে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন:
“যাকে ইচ্ছা তিনি কন্যা সন্তান দেন, যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দেন।” (সূরা আশ-শূরা: ৪৯)
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর জীবদ্দশায় কন্যাদের প্রতি যে ভালোবাসা, দয়া ও মর্যাদার দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন, তা মানবতার ইতিহাসে অনন্য। তিনি বলেছিলেন,
“যে ব্যক্তি দুই কন্যাকে দায়িত্ব নিয়ে লালন-পালন করবে, কেয়ামতের দিনে আমি এবং সে এভাবে একসাথে থাকবো।” (বুখারী)
আমাদের সমাজে এখনো কোথাও কোথাও কন্যা সন্তানকে বোঝা হিসেবে দেখা হয়, যা ইসলামের দৃষ্টিতে চরম ভ্রান্ত ধারণা। প্রকৃতপক্ষে কন্যারা পরিবারে শান্তির প্রতীক, সহানুভূতির আধার এবং ভবিষ্যতের একজন মা হিসেবে সমাজ গঠনে মৌলিক ভূমিকা রাখে।
একজন কন্যা যদি সঠিকভাবে লালিত-পালিত হয়, তবে সে একজন দায়িত্বশীল মা, শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক, সহানুভূতিশীল ডাক্তার বা সমাজসেবী হয়ে উঠতে পারে। সে পরিবারে আলো জ্বালায়, ভালোবাসা ছড়িয়ে দেয়। আল্লাহর রাসূল (সা.) কন্যাদের জন্য উত্তম আচরণ ও স্নেহ প্রদর্শনের মাধ্যমে সমাজকে শিক্ষা দিয়েছেন—নারীকে মর্যাদা দাও, ভালোবাসো।
আজ প্রয়োজন সমাজের মানসিকতা পরিবর্তন। প্রয়োজন কন্যা সন্তানকে সম্মান ও ভালোবাসার চোখে দেখা। কন্যা সন্তান লজ্জার নয়, বরং গর্বের বিষয়।
আসুন, আমরা সবাই মিলেই বলি—
কন্যা সন্তান আল্লাহর অপরূপ নিয়ামত, তার আগমন যেন হয় আনন্দ আর শুকরিয়ার উৎস।