প্রতিবেদন:হৃদয় চক্রবর্তী:
বীর পটিয়ার নাইখাইন গ্রামের কৃতিসন্তান বাংলার বীর একাত্তর এবং তার পরবর্তী দূর্সময়ের এক অন্যন্য নায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মহসীন খান।১৯৫০ নভেম্বর মাসের ১১তারিখ বীর চট্টলার পটিয়াস্থ ছায়ানিবিড় নাইখাইন গ্রামে পিতা মরহুম হাজি মনির আহমদ এবং মাতা মরহুমা আালিমুন্নেছার কোল আলো করে জন্মনিলেন এক ফুটফুটে শিশু। কেইবা জানত এই শিশুটিই হয়ে উঠবে একদিন এই সারা পটিয়া তথা বাংলার একজন অকুতোভয় বীর। ছায়াসুনিবিড় সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ নাইখাইন গ্রামে বেড়ে উঠতে লাগলেন সেদিনের সেই শিশু মহসীন খান। পড়ালেখা খেলাধুলা এসবকিছুর পাশাপাশি আরো যে দিকটি প্রতিয়মান ছিল ছোট বেলা থেকেই, তা হল মানবিকতা। গ্রামবাংলার খেটেখাওয়া মানুষগুলোর প্রতি তার ছিল এক বিশেষ আকর্ষণ।যা তাকে আজও স্মরণীয় করে রেখেছে প্রবীণ থেকে শুরুকরে বর্তমান প্রজন্ম পর্যন্ত সকলের হৃদয়ের মণিকোঠায়।সালটি ছিল ১৯৭১পাকিস্তানি শাসকদের নির্যাতন তখন তুঙ্গে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখমুজিব সহ বাংলার তৎকালিন সকলনেতৃবৃন্দ একজোট হন তাদের (পাকিস্তানি শসকদের)শাসন নামক শোষণের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে। বয়সইবা কত তখন তার, সদ্য বিএসসি সম্পন্নকরা একজন যুবক। কথা ছিল নিজের জিবন ও জীবিকা নিয়ে ভাববার। কিন্তু দেশের যখন এই অবস্থা ঠিক তখন নিজেকে নিয়ে ভাববার মত এতটা তথা কথিত ভালো ছেলে হতে পারেননি তিনি। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়াদিয়ে কিছুদূর জিপে এবং কিছুদূর পায়ে হেঁটে ছুটে যান যুদ্ধ প্রশিক্ষণ ময়দানে। সেখান থেকে মেজর রশিদ এর নেতৃত্বে ১নং সেক্টর হয়ে যুদ্ধে যোগদান করেণ সতর্কতার সাথে। পরবর্তীতে পয়েহেঁটে ফিরেন নিজে এলাকায়। নিজদলকে সাথে নিয়ে চালানো কিছু অপারেশন স্থান হল
জিরি, আনোয়ারা থানা, ইন্দ্রপুল, কর্ণফুলী নদীতে, জাহাজ অপারেশন, গৈড়লারটেক , বসরত নগর মাদ্রাসা, রায়খালি, কালায়ার হাট, বাঁশখালী, বেঙ্গুরা,রেল অপারেশন এবং বর্তমান পটিয়া থানা
স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে ও থেমে থাকেন নি এই বীর যোদ্ধা। এই যুদ্ধবিদ্ধস্থ দেশের পুনর্গঠনের কাজে নিয়োজিত করেন নিজেকে।নিজ ইউনিয়নের মানুষের কথা ভেবে নিজ ইউনিয়ন ৯নং জঙ্গলখাইনের চেয়্যারম্যান প্রার্থী হন তিনি।এবং মানুষে ভালোবাসার নিদর্শন স্বরুপ বিশাল ব্যাবধানে পর পর ৩বার নির্বাচিত হন তিনি (১৯৭৪–১৯৮৫) সময়ে নিরলস শ্রমদিয়ে এগিয়ে নিয়ে যান নিজের ইউনিয়ন কে।
উনার অবদানে প্রতিষ্ঠিত হয় ইউনিয়ন কৃষি স্কুল এন্ড কলেজ,,পোষ্ট অফিষ, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, লড়িহরা জামে মসজিদ।নাইখাইন গৈড়লা আইনুদ্দীন মুন্সি ও কাছেম আলি মুন্সি কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ
এর পরবর্তীতে পটিয়ার সর্বসাধারণ মানুষের কথা ভেবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হন তিনি এবং দুই তৃতীয়াংশ ভোটপেয়ে জয় লাভ করেণ তিনি (১৯৮৫–১৯৯১) ২বার।
উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন অসংখ্য অবদান রাখেন পটিয়া উপজেলায়।উপজেলা পরিষদ ভবন, উপজেলা অস্থায়ী স্বাস্থ্য ক্লিনিক, নিজবাড়ি জামে মসজিদ সংস্কার তার আমলে প্রতিষ্ঠিত হয়
১৯৯১ এর ঘূর্ণিঝড়ে বিশেষ ভূমিকা রাখেন তিনি
এই মহাণ মানুষটি আমাদের ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমান ২০২০সালের এই দিনটিতে।।
তিনি আমাদের মাঝে না থাকলেও কৃত কর্মের মাধ্যমে তিনি রয়ে যাবেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।