জুলাইয়ের স্মৃতি
রজিব মাহমুদ
জুলাই এসেছিল আগুন হাতে,
স্কুল-কলেজে ঝুলতো তালা ।
শিক্ষার বদলে রাস্তায় খেলা
রক্তে লেখা এক বিদ্রোহের মেলা।
দিনে খুন, রাতে গুম,
নির্বাক শহর—আতঙ্কে নিঃশব্দ ধ্বনি।
পুলিশ তখন মৃত্যুর রাজার মতো,
হায়েনার চোখে জ্বলতো আগুনের ক্ষত।
তাদের থেকে বাঁচতে আমরা পালাতাম,
ভয়ে নয়, লজ্জায় মাথা নিচু করতাম।
কেউ কেউ বুক চিতিয়ে দাঁড়াতো আগুনে—
রংপুরের সাঈদ দিলো প্রাণ, একা নয় নিঃসঙ্গেই।
সেই থেকেই শুরু হয় জুলাইয়ের লড়াই,
পেছনে ফিরে তাকায় না কারও হৃদয়ের গাঁই।
নেত্রী ফিরলেন দূরদেশ ভ্রমণ সেরে,
“যতো সব মেধাবি?” — “তোমরা রাজাকারের ছেলে!”
ফেসবুকে পোস্ট? মুছে ফেলো এখনই,
না হলে কী হবে— পিঠের ছাল যাবে এক্ষুনি।
ইন্টারনেট বন্ধ—অজুহাতে ঢেকে দেয়,
“বোর্ড ব্যাংকে আগুন!”—বলে আমাদের বুঝায়।
“পানি! পানি!”—চিৎকারে মুখ থুবড়ে পড়ে,
নিরীহ মুখগুলো ধুলোয় মিশে যায় মরে।
মানুষের জীবন তখন সস্তা খেলনার মতো,
একটি গুলি, আর সব স্মৃতি ফিকে হয়ে যেত দ্রুত।
হেলমেটের বাহিনী চালায় আঘাতের ঢেউ,
কত মা আজও খুঁজে ফেরে ছেলেকে,
চোখে শুধুই কান্নার ঢেউ।
এই জুলাই কেড়ে নিয়েছে প্রাণ, কেড়েছে আশা,
ছাত্রের রক্তে ভিজেছে রাজপথ, নিঃশেষ হলো ভাষা।
এই জুলাই তাই রক্তের দলিল,
কান্না, ক্ষোভ, ও স্বপ্নভঙ্গের নীল।
কত মায়ের বুক আজো পোড়ে,
জুলাইয়ের স্মৃতি তীব্র জ্বালায় গলে।