1. news@dainikchatgarkobor.com : দৈনিক চাঁটগার খবর : দৈনিক চাঁটগার খবর
  2. info@www.dainikchatgarkobor.com : দৈনিক চাঁটগার খবর :
রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
পটিয়ায় আল মুজতবা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ﷺ উপলক্ষে ইসলামী জ্ঞান প্রতিযোগিতা ও সেমিনার অনুষ্ঠিত পটিয়ার কণ্ঠস্বর-মোহাম্মদ শহীদুল আলম শরীয়াভিত্তিক ব্যাংকে গণহারে কর্মী ছাঁটাই।চাকরি যাবেনা গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী-মোহাম্মদ শহিদুল আলম। চিঠি দিবসে “আহমেদ রাজুর” বিশেষ কলাম হাইদগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে, প্রধান শিক্ষকের মিথ্যা মামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি(কামরুজ্জামান) এর দক্ষিণ জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ বিদ্রোহের আলোয় তুমি অমর -চাতক শাকিল নজরুল স্মরণে —জাফর আহম্মেদ মুগ্ধ বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৮১ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পটিয়া হুলাইন ছালেহ নূর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের দোয়া মাহফিলের আয়োজন

যৌতুকের গরু ও গর্ভস্থ শিশুর কবর: সমাজ কি এখনো মানুষ হতে পারল না?

  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫
  • ২২৪ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর বিলকিস কিংবা পটিয়ার শাহনাজ কামরুন নাহার মহুয়া—দুই নারী, দুই ভিন্ন পরিবার, কিন্তু মৃত্যু যেন একই সূত্রে গাঁথা। যৌতুক নামক সামাজিক অভিশাপ তাদের জীবন কেড়ে নিয়েছে। একদিকে কুরবানির গরুর অভাবে আত্মহত্যা, অন্যদিকে ৯ মাসের গর্ভে সন্তান নিয়ে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণ হারানো এক শিক্ষিতা নারী।

একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে, আমরা কি এখনো বুঝতে পারিনি—একজন নারী মানুষ, পণ্য নয়?

বিলকিসের কুরবানী  : গরু না দেওয়ার অপরাধে মৃত্যু
বোয়ালখালী উপজেলার এক সাধারণ নারী বিলকিস। কুরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসছিল। শ্বশুরবাড়ি দাবি করেছিল গরু—‘যৌতুক’ হিসেবে। কিন্তু বিলকিসের গরীব পরিবার তা দিতে পারেনি। এর জবাবে চলতে থাকে মানসিক ও সামাজিক অবমাননা। ঈদের আনন্দে যেখানে ঘর আলো করে ওঠে, সেখানে বিলকিসের জীবনের আলো নিভে যায় চিরতরে।
শুধু ‘একটি গরু’ না দেওয়ার অপরাধে বিলকিসের আত্মহত্যা আমাদের সমাজকে কোথায় দাঁড় করায়?

মহুয়ার মৃত্যু: সন্তানসহ সমাধিস্থ এক শিক্ষিতা মেয়ে

আরেকটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে ১৬ অক্টোবর ২০২৪ সালে, পটিয়ায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শাহনাজ কামরুন নাহার মহুয়া তখন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। যৌতুকের কারণে তার উপর চলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। একটি সন্তান—যে মাত্র কদিন পর পৃথিবীর আলো দেখত, সেই শিশুসহ মহুয়াকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় চিরতরকার অন্ধকার কবরে।

একজন শিক্ষিত, অন্তঃসত্ত্বা নারী—যার শরীরের ভেতর নতুন জীবন গঠিত হচ্ছিল—তাঁকেও রেহাই দেয়নি এই পিশাচরূপী যৌতুক সংস্কৃতি।

কিছু প্রশ্ন, যা আমাদের করতে হবে এখনই:
কুরবানি কি ধর্মীয় উৎসব, নাকি যৌতুক আদায়ের আরেক উপলক্ষ?
একজন শিক্ষিতা নারীও যদি বাঁচতে না পারেন, তাহলে বাকি নারীদের নিরাপত্তা কোথায়?
একজন পুরুষের পরিবার কেন মনে করে, একজন নারীকে পেতে হলে সঙ্গে গাড়ি, গরু, নগদ টাকা পাওয়াটা ‘অধিকার’?

সমাধান আমাদের হাতেই:
এতসব ঘটনার পরেও আমরা যদি চুপ থাকি, তাহলে ভবিষ্যতের আরেক বিলকিস, আরেক মহুয়াও অপেক্ষা করবে সেই নির্ধারিত মৃত্যুর জন্য। এখন সময়— যৌতুককে সামাজিক অপরাধ নয়, সামাজিক ‘কলঙ্ক’ হিসেবে চিহ্নিত করার।
নারীর সম্মান ও নিরাপত্তাকে শুধুই আইনের মধ্যে নয়, পারিবারিক শিক্ষার ভেতরেও প্রতিষ্ঠা করার। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতা বন্ধ করে, তার মূল শিক্ষা—সংযম, সহানুভূতি ও মানবতা—ফিরিয়ে আনার।
শেষ কথা:
গরু না পেয়ে বিলকিস মরেছে। গর্ভে সন্তান নিয়েও মহুয়া মরেছে। আর আমরা—আমরা কেবল খবর পড়ছি, আফসোস করছি। পরিবর্তন যদি চাই, তবে প্রতিবাদ শুধু শব্দে নয়, কাজে হতে হবে। প্রতিটি পরিবারকে এখন বলতে হবে—
নারী কোনো পণ্যের নাম নয়, যৌতুক কোনো অধিকারের বিষয় নয়।”
“কুরবানি পশুর নয়, কুসংস্কারের হওয়া উচিত।”

  • তোষাদ রায়হান
    কবি ও লেখক
আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট