দরবারে গাউসে পাক হতে সুসংবাদ প্রাপ্তির পর হুযূর ক্বেবলা হযরত আল্লামা তৈয়্যব শাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি জঠিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে মুরীদগনের অনুরোধে চিকিৎসার্থে লণ্ডনে তশরীফ নিয়ে যান।হাসপাতালে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ডাক্তার চিকিৎসা করতে লাগলেন হুজুর ক্বেবলাকে। যে বিশেষ ডাক্তার হুজুরের চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন, তিনি সপ্তাহে ২দিন লণ্ডনে, ২দিন প্যারিসে, ২দিন নিউইয়র্কে এবং এক দিন বিশ্রামে থাকেন। প্রথম দিন ডাক্তার সাহেব যা করার তা করে নিলেন, দ্বিতীয় দিন খুব বিনয় ও আদব সহকারে দু'হাত বুকে রেখে উপস্থিত হলেন।প্রয়োজনীয় পর্যবেক্ষন সেরে নেওয়ার পর হুযুর ক্বেবলাকে সামনে রেখে পেছনের দিকে উল্টোদিকে হেটে চলে আসলেন। ডাক্তার সাহেবকে ফি দেওয়া হলে তিনি ফি নিলেন না।ডাক্তার বললেন "He is a great saint"(তিনি একজন মহান সাধক)। হুযুরের আধ্যাত্মিকতা ডাক্তারের কাছে গোপন থাকেনি। মেডিকেল বোর্ড রোগ নির্ণয়ে তৎপর। পর্যবেক্ষনে রোগ নির্ণয় হলো। রোগের নাম "লিমফোমা"যা ক্যান্সার থেকেও হাজারগুনে ভয়াবহ। মৃত্যুই এর অনিবার্য পরিণতি। ইতোপূর্বে একই রোগের আরো দুজন রোগী এ ডাক্তারের চিকিৎসাধীন ছিলো। একজন হাসপাতালেই মারা যায় আর অন্যজন বাসায়।হুজুর তৃতীয় রোগী। রোগের বিবরন শুনে সবাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো। যার সান্নিধ্য এসে অসংখ্য দিশেহারা মানুষ সত্যের সন্ধান লাভ করে, তিনি আজ এই কঠিন রোগে আক্রান্ত। তবে তিনিতো মিল্লাতের রাহবার সুন্নীয়তের বিশাল ময়দানে এখনো আরো অনেক কাজ বাকী। সাধকের তিরোধানে সুন্নীয়তের অপূরনীয় ক্ষতি হবে।আল্লাহর করুনায় হযরাতে কেরামের নেগাহে করমে মরণব্যাধি তাঁড়াতাড়ি তাকে পরপারে নিয়ে যেতে পারেনি। ছয়মাস পর ঔষধ পরিবর্তন করার কথা বলেছিলেন ডাক্তার সাহেব। ছয়মাস পরে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে ডাক্তার বিম্ময়ে হতবাক হয় জিজ্ঞেস করলেন-Is he still alive?(তিনি কি এখনো বেঁচে আছেন?) আল্লাহর অপার অনুগ্রহে হুযুর ক্বেবলা রহমাতুল্লাহি আলাইহি ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দের পর আরো ১৩ বছর জাহেরী হায়াত লাভ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ।
১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি স্বাভাবিকভাবে পাকিস্থান, বাংলাদেশ, বার্মা, হিন্দুস্থান, ইউরোপ, ইরাক, বাগদাদ শরীফ ইত্যাদি দেশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শরীয়ত ও তরীকতের প্রচারে যে অসাধারন খেদমতের আন্জাম দিয়েছিলেন তা সুন্নীয়তের ইতিহাসে অম্লান হয়ে থাকবে। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে রোগ আবার দেখা দিলো,সবার অনুরোধে পুনরায় লণ্ডনের হাসাপাতালে ভর্তি হলেন।
৬ বছর পূর্বের প্রদত্ত ডাক্তারী রিপোর্ট পর্যবেক্ষন করে সবাই হতবাক! ইংরেজ নার্স বললেন He is a great saint that I have never seen in my life,(তিনি একজন মহান সাধক পুরুষ,আমার জীবনে কখনও এমন সাধক পুরুষ দেখিনি)।
রোগের কারনে হুজুর ক্বেবলা কোনদিন "উহ"শব্দটিও বলেননি। বেলায়তের উচ্চাসনে ব্যক্তিদের অধিষ্ঠিত মহৎ প্রান এমনি হয়ে থাকে।
সুবহানআল্লাহ
ততথ্যসূত্র:মুজিব উল্লাহ কুতুবী